ওয়েব ডেস্ক: নদিয়ার (Nadia) অন্যতম প্রাচীন দুর্গাপূজো হিসেবে খ্যাত ঘোষ বাড়ির পুজো (History Of Ghosh Barir Pujo) এবার ৫০৬তম বছরে পদার্পণ করল। আনুমানিক ১৫২০ খ্রিস্টাব্দে চৈতন্য চরণ ঘোষ হুগলি জেলার আকনা অঞ্চল থেকে ব্রহ্মডাঙ্গায় এসে স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন করেন। পরবর্তীতে এই অঞ্চল রানাঘাট নামে পরিচিত হয়। এখানেই তিনি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন এবং দুর্গাপুজোর (Durga Puja) সূচনা করেন। নিঃসন্তান হওয়ায় তাঁর মৃত্যুর পর ছোট ভাই মকারন্ধ ঘোষের বংশধররা এই পূজোর দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
বর্তমানে ঘোষ বংশের ২৯তম প্রজন্ম রণজিৎ ঘোষ এই ঐতিহ্য বহন করছেন। রণজিৎ ঘোষ জানান, দুর্গাপূজার প্রথম বছর যে মাটি দিয়ে পট তৈরি হয়েছিল, সেই মাটি সংরক্ষণ করা হয়েছে এবং আজও সেই ঐতিহ্য বজায় রেখে নতুন মাটির সঙ্গে মিশিয়ে পাটা তৈরি করা হয়। এই প্রাচীন পদ্ধতিতে বছরের পর বছর দেবীমূর্তি গড়া হচ্ছে, যা এই পূজোর এক অনন্য ঐতিহ্য।
আরও পড়ুন: রোমহর্ষক ইতিহাস, বেলজিয়ামের ঝাড়বাতি ও বাঁকুড়ার প্রাচীন পুজো
একসময় এখানে ৫১টি পাঠা এবং মোষ বলি হত। তবে ১৯৩৪ সালে স্বপ্নাদেশের মাধ্যমে পাঠা বলি বন্ধ হয়ে যায়। ঘোষ বংশের রামগোপাল ঘোষের মৃত্যুর পর আর এই বলির রীতি চালু রাখা হয়নি। বর্তমানে বলির পরিবর্তে প্রতীকী পদ্ধতিতে পূজার অনুষ্ঠান হয়।
ঘোষ বাড়ির দুর্গাপূজায় বিশেষ নিয়ম অনুসরণ করা হয়। পঞ্চমী তিথিতে বোধন শুরু হয় এবং ষষ্ঠীতে নয়। অধিবাসের সময় রক্ষা প্রদীপ জ্বালিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পাঁচ শতাধিক বছরের ঐতিহ্য নিয়ে নদিয়ার এই দুর্গাপূজো আজও গ্রামবাসীসহ বহু ভক্তের কাছে এক শ্রদ্ধার কেন্দ্রবিন্দু। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে এই পুজো বহমান এবং প্রাচীন রীতি ও বিশ্বাস বজায় রেখে তা আজও সমুজ্জ্বল।
দেখুন আরও খবর: